ডেস্ক রিপোর্ট |
মৌলভীবাজারের রাজনগরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সিমলা আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রী। মৃত্যুর আগে সে চিরকুটে ‘আমার মৃত্যুর জন্য ড্রাইভার দায়ী’ লিখে গেছে। তার পড়ার ঘর থেকে চিরকুটটি উদ্ধার করেছে পরিবার।
বুধবার বিকেলে ঐ উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিমলা আক্তার ঐ গ্রামের আওলাদ মিয়ার মেয়ে। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সিমলা আক্তার কান্দিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। সে পাশ্ববর্তী ফতেপুর ইউনিয়নের জোড়াপুর গ্রামের নানাবাড়িতে থেকে লেখাপড়া করত। মাসখানেক আগে নিজের বাড়িতে আসে সিমলা। সেখান থেকে তাকে বিদ্যালয়ে আনা-নেয়ার জন্য আলী নামে এক সিএনজি চালককে ভাড়ায় রাখা হয়।
সম্প্রতি ঐ সিএনজি চালক ও সিমলার মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জন ওঠে। এ নিয়ে স্থানীয় মানুষ নানা কথা বললে সিমলা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বুধবার দুপুরে নিজ ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে গলায় ওড়না বেঁধে ফাঁস দেয়। ঐ অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্বজনরা সিমলাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে সিমলার মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা তার পড়ার ঘর থেকে সেই চিরকুট উদ্ধার করেন। চিরকুটে সিমলা লিখেছে- ‘আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র ডাইভার দায়ি। ডাইভারকে জেন সঠিক শাস্তি দেওয়া হয়। ডাইভারকেও আমার কাছে পাঠাইয়া দিয়। আমার কথা বেভে কেউ কষ্ট পাইয় না। কষ্ট একটাই ভাই-বোন আর আব্বার সাথে শেষ ভারের মাততে পারলাম না। কিনতা না করিয়া ও নিজর ইজ্জত রাখতে পারলাম না। সবাই জেনে গেছে আমি খারাপ। আমি খারাপ না। এই অপবাধ ঘাড়ে লইয়া চলতে পারতাম নায়। তাই নিজর জিবন নিজেই নিয়ে নিলাম। ডাইভারদের বলছি বিশেষ করে জুলমানদের সঙ্গে ডাইভারদেরকে কার বিষয়ে না জেনে মিথ্যা অপবাধ দিয় না। এই অপবাধের কারণে সেই মানুষের জিবন ও নিয়ে নিতে পারে। আল্লায় সকলের মা বইন আল্লায় দিছইন। এখন তেকে মানুষর রিরুদ্ধ কোনতা কউয়ার আগে জেন অনেক ভার বাবে। দোয়া কর আল্লাহ যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করিয় আল্লাহ আমাকে জেন দুজখের আগুনে যেন না পুরান। ইতি সিমলা।’
নিহত সিমলার স্বজনরা বলেন, সে মৃত্যুর জন্য ড্রাইভারকে দায়ী করে গেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
উত্তরভাগ ইউনিয়নের মেম্বার তপুর আলী বলেন, মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে তার পরিবারের লোকজন আমাকে একটি চিরকুট দেখিয়েছে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
রাজনগর থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেয়েটির মা মামলা করেছেন। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে
ওয়েবসাইট নকশা প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট